মারুফ এবং মামুন দুই বন্ধু। কথা হচ্ছে তাদের দুজনের মধ্যে!
মারুফঃ দোস্ত সামনের ১২ তারিখে আমাদের ডিপার্টমেন্টের ১০/১২ জন ছেলেকে জোগাড় করতে পারবি ক্যাম্পাসের ভিতরে?
মামুনঃ কেনো জোগাড় করে কি হবে?
মারুফঃ আরেহ এখনি এত কিছু বলতে পারবো না! খুব দরকার! চল পোলাপান কল দেয়া শুরু করি।
এভাবে ফোন দিয়ে ১২ তারিখে ১১ জন ছেলেকে জোগাড় করে ফেলেছে মারুফ এবং মামুন। তারা প্রত্যেকেই কনফার্ম করেছে যে কোনো মূল্যেই ১২ তারিখ ক্যাম্পাসে থাকবে। তবুও মারুফের প্ল্যান আরো চারজনকে ব্যাকাপ হিসেবে রাখা কারন কোনো কারন ঐ ১১ জন কথা রাখতে না পারলে ব্যাকাপ দিতে পারবে।
মারুফঃ চল দোস্ত একটু কাপড়ের দোকানে যাই!
মামুনঃ কি কিনবি?
মারুফঃ আরেহ চল! গজ কাপড় কিনবো।
মারুফ এবং মামুন রিকশা চড়ে এক গজ কাপড়ের দোকানের সামনে থামলো। রিকশা ভাড়া মিটিয়ে দোকানে ঢুকে দোকানদারের সাথে কুশল বিনিময় করলো মারুফ।
মারুফঃ ভাই পিংক কালারের শার্টের কাপড় আছে?
দোকানদারঃ আছে ভাই! আপনার জন্য?
মারুফঃ না আমার না। আচ্ছা ১৫ পিস শার্ট বানাবো কাপড় হবেনা ১৫ পিসের কাপড়?
দোকানদারঃ অবশ্যই হবে। যত পিস চান ম্যানেজ করে দেয়া যাবে।
মামুন কিছুই বুঝতে পারছিলো না কি হতে যাচ্ছে শুধু একবার দোকানদারের দিকে তাকায় আরেকবার মারুফের দিকে তাকায়।
মারুফঃ ভাই কাপড় অত ভালো কোয়ালিটির না হলেও চলবে। একটু কম দামের ভিতরে দিয়েন।
দোকানদারঃ আচ্ছা ভাই দেখাচ্ছি।
দোকানদার পিংক কালালের শার্ট বানানোর জন্য কাপড় দেখালো। মারুফের পছন্দও হলো!
মারুফঃ আচ্ছা এবার সাদা প্যান্টের জন্য কাপড় হবে? ১৫ পিস বানাবো!
দোকানদারঃ সাদাও হবে তয় কাপড় খুব একটা ভালো হবেনা।
মারুফঃ আরেহ ভাই ভালো কাপড় লাগবেনা। সস্তাটাই দেখান।
মামুনঃ কিরে মারুফ তুই এগুলা কি করছিস!! এত গুলা সেম শার্ট প্যান্ট বানাবি কেনো?
মারুফঃ পরে শুনিস।
দোকানদার সাদা প্যান্টের কাপড় এনে দেখালো। মারুফ ১৫ পিস পিংক কালারের শার্টের কাপড় এবং সাদা প্যান্টের কাপড় নিয়ে রওনা হলো দর্জির দোকানে।
মারুফঃ মামুন তুই যাদের ফোন দিয়েছিস আবার তাদের ফোন দে আমিও যাদের ফোন দিয়েছি আমিও তাদের আবার ফোন দিচ্ছি। সবার শার্ট আর প্যান্টের মাপটা নোট কর এই সাথে বলে দিবি সবাইকে ১১ তারিখ আমার বাসায় বিড়িয়ানির দাওয়াত। অবশ্যই যেনো আসে।
মামুনঃ মারুফ আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা তুই কি করছিস!
মারুফঃ এত কথা বলিস না। সময়য় হলে সবই জানতে পারবি। জানিসই তো আমি সময়ের আগে কিছু বলিনা।
এভাবে মারুফ এবং মামুন সবার শার্ট প্যান্টের মাপ নিয়ে দাওয়াত দিয়ে গজ কাপড় নিয়ে দর্জির দোকানে সেসব বানাতে দিলো। এমনকি মামুনেরও জন্যেও শার্ট প্যান্ট বানাতে দিলো মারুফ শুধু নিজের জন্য ছাড়া।
আজ ১১ তারিখ!
যারা আগামীকাল ১২ তারিখে আসার কথা দিয়েছিলো সবাই সময় মত মারুফের বাসায় চলে আসলো দাওয়াত খেতে। মারুফ প্রত্যেকের হাতে নিজ নিজ শার্ট প্যান্টের সেট বুঝিয়ে দিলো। তারপরে বললো আগামিকাল সবাই তোরা এই একই কালারের শার্ট প্যান্ট পড়ে কলেজে চলে আসবি। শুধু আমি অন্য কালারের শার্ট প্যান্ট পড়বো!
সবার মুখে একটাই প্রশ্নঃ “কেনো ভাই কি হবে?” “কেনো ভাই কি হবে?”
মারুফঃ কাল আমি তোমাদের নিয়ে ক্যাম্পাসে নেচে নেচে গান গেয়ে শাবনুরকে পটাতে চেষ্টা করবো। আমাদের সবাইকেই একই ভাবে ড্যান্স করতে হবে সুতরাং আমরা সবাই এখন খেতে বসার আগে একটু ড্যান্স রিহার্সেল করে নেই।
বাংলা সিনেমায় আমরা প্রায়ই দেখি এভাবে নায়ক নেচে গেয়ে নায়িকাকে পটাতে চেষ্টা করে কিন্তু এর এই গল্পের পিছনের গল্পটা আর কখনোই দেখানো হয়না কোনো সিনেমায়। আমি অবাক হতাম হঠাৎ করে নায়ক এভাবে একই ড্রেসে ছেলে কিভাবে জোগাড় করলো!! তাই আমি উপরের গল্প দ্বারা সেটাই তুলে ধরলাম।